Thursday, March 12, 2015

নির্যাতনের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে

নির্যাতনের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে
নাঈম ইসলাম প্রতিনিধি ক্রাইম নিউজ : পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতামুক্ত রাখা সংক্রান্ত যে প্রস্তাব বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সরকারকে দিয়েছে তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এছাড়া যেসব পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতনে জড়িত থাকার পর্যাপ্ত ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণ রয়েছে তাদের বিচারের হাত থেকে রক্ষা না করতেও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সরকারকে ওই আহ্বানে বলেছে, নির্যাতনের সকল অভিযোগ ও প্রতিবেদন কোন ব্যতিক্রম ছাড়াই তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
১০ই মার্চ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে।এতে বলা হয়, বাংলাদেশের একটি পত্রিকা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, পুলিশ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি আইনের একটি ধারা বাতিলের প্রস্তাব করেছে।
ওই আইনে, যে কোন পরিস্থিতিতে জেলহাজতে কাউকে নির্যাতন অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জড়িতদের শাস্তির বিধান রয়েছে। পুলিশ কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে টর্চার অ্যান্ড কাস্টোডিয়াল ডেথ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট, ২০১৩ (নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধ আইন)-এর পুনর্বিবেচনা চায়। নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পূর্বের আইনসমূহকে শক্তিশালী করেছে এ আইনটি।
পুলিশ কর্তৃপক্ষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ওই আইনের ১২ অনুচ্ছেদটি বিলুপ্তির প্রস্তাব করেছে।তারা র‌্যব, ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি), সেপশাল ব্রাঞ্চ, ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চের মতো পুলিশের বিশেষ শাখাসমূহকেও ওই আইনের অধীনে বিচারের আওতামুক্ত রাখার প্রস্তাব করেছে।
বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রকৃতি বোঝাতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো পুলিশের দ্বারা বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনাসমূহ উদাহরণ হিসেবে সংরক্ষণ করে আসছে। কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন নির্যাতন বিচারের আওতামুক্ত রয়েছে। এমনকি এ ধরনের অনেক ঘটনায় যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয় না।
অ্যামনেস্টি বলেছে, এমনকি বর্তমান নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধের আইনটি বলবৎ থাকা স্বত্ত্বেও, দেশজুড়ে বিস্তৃত আকারে সংঘটিত হতে থাকা বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি হবার ঘটনা খুবই বিরল।

এ ধরনের নির্যাতনের শিকার বিভিন্ন ব্যক্তি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেছেন যে, পুলিশ স্টেশনের কর্মকর্তারা এ আইনের অধীনে নির্যাতনের অভিযোগ গ্রহণে খুবই অনাগ্রহী। কিন্তু যখন মানুষ প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে, সেসব ক্ষেত্রেই কেবল বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

0 comments:

Post a Comment

Welcome